আট উপজেলার মোট ৫২২টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ২০৬ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলা পুলিশের আওতায় রয়েছে ৫১০টি ভোট কেন্দ্র। বাকি ১২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে নগর পুলিশের আওতাধীন এলাকায়। ভোটকেন্দ্রগুলো ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার সকাল থেকে বিশেষ এই নিরাপত্তা শুরু হয়েছে।
নির্বাচনে মোতায়েনকৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ শুক্রবার বিকালে জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে বৈঠক করেছেন। শতভাগ নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
জেলা পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, আসন্ন এই নির্বাচনে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে থাকছে কেন্দ্র, মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এতে জেলা পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। জেলার আট উপজেলায় ৫১০ ভোটকেন্দ্র ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে ২০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) ভোটকেন্দ্র ধরা হয়েছে। বাকি ৩০৪টি কেন্দ্র সাধারণ ধরে নিরাপত্তা ছক তৈরি করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৫ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্বে থাকবে।
জেলার তানোর উপজেলায় ৫১ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এই উপজেলায় ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ২৩টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র রয়েছে। গোদাগাড়ী উপজেলায় ৯৮ ভোটকেন্দ্রের ৩৬টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৫৮টি ভোটকেন্দ্র সাধারণ। মোহনপুর উপজেলায় ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২১টি সাধারণ মিলিয়ে মোট ভোটকেন্দ্র ৪৪টি।
বাগমারায় জেলার সর্বাধিক ১০৬টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে ২৭টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৭৯টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র। দুর্গাপুরের ৫৩ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৫টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৩৮টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র। জেলার পুঠিয়ায় ৫২ ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২৯টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র।
চারঘাট উপজেলায় ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২১টি সাধারণ মিলিয়ে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪৪টি। এছাড়া বাঘা উপজেলার ৫৯ ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এখানকার ২২টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২১টি সাধারণ ধরে নিরাপত্তা কৌশল ঠিক করেছে পুলিশ।
এদিকে রাজশাহী নগর পুলিশের আওতাধীন ১৬টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। পুঠিয়ায় ১১টি এবং চারঘাটে ৫টি কেন্দ্র। প্রত্যেক ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলছে, নগর পুলিশ। প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্র ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে তারা।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, নির্বাচনে কোথাও কোনো নিরাপত্তার শঙ্কা নেই। তারপরও জনগণের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নির্বাচনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ সদস্যসের সঙ্গে ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। আর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে কেবল বাড়বে একজন পুলিশ সদস্য।
নির্বাচনে প্রতি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় দুটি করে মোট ১০৯টি মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করবে। প্রত্যেক থানায় থাকবে একটি করে স্ট্রাইকিং টিম। প্রস্তুত থাকবে জেলা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম (কিইউআরটি)। এছাড়া পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য রিজার্ভে থাকবে। নির্বাচনে নগর পুলিশও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে যাবে। পরদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। এখন পর্যন্ত নির্বাচন ঘিরে অপ্রতীকির ঘটনার খবর নেই।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর জানিয়েছে, জেলার তানোরে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৪৩ জন, গোদাগাড়ীতে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩ জন, মোহনপুরে এক লাখ ২৯ হাজার ২৪৮ জন, বাগমারায় ২ লাখ ৭৮ হাজার ১৪ জন, পুঠিয়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ৭২৪ জন, দুর্গাপুরে এক লাখ ৪১ হাজার ১০৫ জন, চারঘাটে এক লাখ ৫৯ হাজার ৭২৫ জন এবং বাঘায় এক লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন মোট ৮৯ জন প্রার্থী। দুই চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বাঘা উপজেলার লায়েব উদ্দিন লাভলু ও মোহনপুর উপজেলার আবদুস সালাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হচ্ছেন। দু’জনই ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী। যাচাই-বাছাইকালে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।
অন্যদিকে গোদাগাড়ী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুফিয়া খাতুন মিলির সাথে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। ভোটের মাঠে রয়েছেন ১৮ চেয়ারম্যান, ৩১ ভাইস চেয়ারম্যান এবং ২০ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী।